সিপিজিসিবিএল এর বর্তমান প্রকল্পঃ
বর্তমানে সিপিজিসিবিএল এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী ও ধলঘাটা ইউনিয়নে ২ X ৬০০ মেগাওয়াট আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা। এ প্রকল্পের আওতায় আমদানীকৃত কয়লা লোড-আনলোড জেটি, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, টাউনশীপ নির্মাণ, স্থানীয় এলাকায় বিদ্যুতায়ন, বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নির্মাণ এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হবে। উক্ত প্রকল্পের পরিবেশগত ও সামাজিক প্রভাব মূল্যায়ন/সমীক্ষা (EISA) এবং সম্ভাব্যতা সমীক্ষা (Feasibility Study) ২০১৩-১৪ অর্থ-বছরে সম্পাদন করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার ও জাইকার মধ্যে ১৬ জুন ২০১৪ ইং তারিখে একটি ঋণচুক্তি সম্পাদিত হয়। প্রকল্পের অনুমোদিত আরডিপিপি অনুযায়ী, এই প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ৫১,৮৫৪.৮৮ কোটি টাকা। প্রকল্পের মোট অর্থায়নের ৪৩,৯২১.০৩ কোটি টাকা প্রকল্প সাহায্য হিসেবে জাইকা থেকে এবং অবশিষ্ট ৭,৯৩৩.৮৫ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকার ও সিপিজিসিবিএল এর নিজস্ব তহবিল থেকে সংস্থান করা হবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে দেশে বিদ্যুৎ ঘাটতি পূরণের পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিসহ দক্ষ জনবল তৈরি হবে এবং দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের ফলে দেশের আমদানি-রপ্তানিতে এক যুগান্তকারী অধ্যায়ের সূচনা হবে।
প্রকল্পের অগ্রগতিঃ
কয়লা লোড-আনলোড এর জন্য বন্দরসহ মাতারবাড়ী ২ X ৬০০ মেগাওয়াট আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের নিমিত্ত ইতিমধ্যে ১৬০৮ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য Owner’s Engineer হিসেবে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এমজেভিসি (MJVC)কে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। এমজেভিসি কর্তৃক প্রকল্পের কারিগরী সবিস্তার বিবরণী (Technical Specification), বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও বন্দরের নকশা প্রণয়ন এবং ইপিসি ঠিকাদার নিয়োগের নিমিত্ত দরপত্র দলিল প্রস্তুত করা হয়েছে। জাপানের সুমিতোমো কর্পোরেশন, তোশিবা কর্পোরেশন ও আইএইচআই কর্পোরেশন এর কনসোর্টিয়ামকে মাতারবাড়ি ২X৬০০ মেগাওয়াট আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের ইপিসি ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। গত ২২ আগষ্ট ২০১৭, ইপিসি ঠিকাদার বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৮ জানুয়ারী ২০১৮ তারিখে মাতারবাড়ি ২X৬০০ মেগাওয়াট আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছেন। উক্ত প্রকল্পের সেপ্টেম্বর, ২০২৪ পর্যন্ত ভৌত অগ্রগতি ৮৯.২০% এবং পোর্ট ও পাওয়ার প্ল্যান্ট কাজের ভৌত অগ্রগতি প্রায় ১০০%।
মাতারবাড়ি ২X৬০০ মেগাওয়াট আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের বিভিন্ন কার্যক্রমের লক্ষ্যমাত্রা ও অর্জন সমূহ নিম্নরুপঃ
ক্রম |
কার্যক্রমসমূহ |
লক্ষ্যমাত্রা |
অর্জন |
---|---|---|---|
০১ |
প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ |
|
১৪ আগস্ট, ২০১৪ |
০২ |
পরামর্শক নিয়োগ |
অক্টোবর, ২০১৪ |
৭ জানুয়ারী, ২০১৫ |
০৩ |
ইপিসি নিয়োগ |
এপ্রিল, ২০১৭ |
২৭ জুলাই, ২০১৭ |
০৪ | ব্যাক এনারজাইজেশন | ২২ অক্টোবর, ২০২২ | ১৫ এপ্রিল, ২০২৩ |
০৫ |
প্রাথমিক সিনক্রোনাইজেশন (প্রথম ইউনিট) |
০৬ জুন, ২০২৩ |
১৯ জুলাই, ২০২৩ |
০৬ | প্রাথমিক কোল ফায়ারিং (প্রথম ইউনিট) | ২২ জুন, ২০২৩ | ০৪ আগস্ট, ২০২৩ |
০৭ |
প্রাথমিক অয়েল ফায়ারিং (দ্বিতীয় ইউনিট) |
২২ অক্টোবর, ২০২৩ | ২২ সেপ্টেম্বর |
০৮ |
বাণিজ্যিক উৎপাদন (প্রথম ইউনিট) |
জানুয়ারি, ২০২৪ | ডিসেম্বর, ২০২৩ |
০৯ |
বাণিজ্যিক উৎপাদন (দ্বিতীয় ইউনিট) |
জুলাই, ২০২৪ |
ইপিসি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান The consortium of Sumitomo Corporation, Toshiba Energy Systems & Solutions Corporation and IHI Corporation (STIC) কর্তৃক প্রকল্পের বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও পোর্ট নির্মাণ (প্যাকেজ ১.২) কাজের আওতায় ১৪.৩ কিলোমিটার দীর্ঘ, ৩৫০ মিটার প্রস্থ ও ১৮.৫ (MSL) মিটার গভীর চ্যানেল, সি-ওয়াল, Revetment এবং Sediment Mitigation Dyke সহ আনুষঙ্গিক ফ্যাসিলিটিস নির্মাণ, Deep Mixing Method (DMM) পদ্ধতিতে সয়েল ইম্প্রুভমেন্ট এবং PVD-PHD পদ্ধতিতে পোর্ট ও পাওয়ার প্ল্যান্টের ভূমি উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত হয়েছে। এছাড়া কয়লা ও তেল আনলোডিং এর জন্য জেটি নির্মাণ, কোল ইয়ার্ড ও ২৭৫ মিটার চিমনির নির্মাণকাজ সম্পন্ন রয়েছে। গত ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ইং তারিখ হতে মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১ম ইউনিট বাণিজ্যিক উৎপাদনে রয়েছে। এছাড়া ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ইং তারিখ হতে ২য় ইউনিটের পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়েছে। বর্তমানে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২য় ইউনিটের বিভিন্ন Commissioning Test পর্যায়ক্রমে সম্পন্ন করা হচ্ছে।
বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণকালীন সময়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও স্থানীয় গ্রামীণ জনপদের বিদ্যুতায়নের লক্ষ্যে চকোরিয়া-মাতারবাড়ি ১৩২ কেভি সঞ্চালন লাইন ও মাতারবাড়ি ১৩২/৩৩ কেভি সাব-স্টেশন নির্মাণসহ মাতারবাড়ি ও ধলঘাটা এলাকায় বিদ্যুতায়নের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।